বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪

প্যারাসিটামল খান তবে বেশি নয়

প্যারাসিটামল অতি পরিচিত একটি ওষুধ। জ্বর কমানোর
গুণ থাকায় এর পরিচিতি ব্যাপক। বেদনানাশক, জ্বর
উপশমক হিসেবে প্যারাসিটামল বেশ কার্যকর
এবং নিরাপদ বলে আমাদের
দেশে ওষুধটি ব্যাপকভাবে ব্যবহƒত হয়ে থাকে। কিন্তু
অনেকেই জানে না, এ ওষুধের অধিক
ব্যবহারে বা অপব্যবহারে দেহের কি ক্ষতি হয়?
প্যারাসিটামল মাথাব্যথা, জ্বর, মাইগ্রেন, দাঁতে ব্যথা,
মাংসের ব্যথার জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত
সেবনে লিভারের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এমনকি গ্যাস্টিকের সমস্যাও দেখা দেয়।
সম্প্রতি আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগস
প্যারাসিটামলের সঙ্গে কডিন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন
করতে বলেছে। কারণ, এতে মৃত্যুর আশঙ্কা আরও
বেড়ে যায়। কিছু বিজ্ঞানীর ভাষ্য হলো,
প্যারাসিটামলের সঙ্গে ক্যাফেইন গ্রহণ
শরীরে বিষাক্ততার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে লিভার
ড্যামেজ করে দেয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত এটি ভাবা হতো যে,
গর্ভবতী মায়ের জন্য প্যারাসিটামল নিরাপদ। এখন
বলা হচ্ছে নিরাপদ নয়।
ব্রিটিশ জার্নাল অব ফার্মাকলজিতে গবেষকরা প্রকাশ
করেছেন, প্যারাসিটামলের কারণে সৃষ্ট পার্শ্বপ্রতিক্র
িয়া ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার লক্ষণগুলো অধিকাংশ
সময়; এমনকি ডাক্তারের নজরও এড়িয়ে যায়। কারণ
একসঙ্গে অনেক প্যারাসিটামল সেবন করলে রক্ত
পরীক্ষায় যে ধরনের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়, দীর্ঘদিন
ধরে সামান্য বেশি সেবনকারীদের রক্তে তা পরিলক্ষিত
হয় না। কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ এ ক্ষেত্রে বেশি।
স্কটিশ ইউনিভার্সিটি হসপিটালের লিভার ট্রান্সপ্লান্ট
বিভাগের একটি গবেষণায় ড. কেনিথ সিম্পসন
দেখিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামল
সেবনকারীদের লিভার ও ব্রেনের ড্যামেজ হওয়ার হার
অত্যধিক বেশি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন
হলে তাদের ডায়ালাইসিস ও ক্ষেত্রবিশেষে কৃত্রিম
শ্বাসপ্রশ্বাস দিতে হয়। প্যারাসিটামল যেসব
ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত নয় তা হলো, গর্ভাবস্থা,
শিশুকে বুকের দুধ দেন এমন মায়েরা, রক্ত পাতলা করার
অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খেতে থাকলে, গ্যাস্ট্রিক
বা আলসার থাকলে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সব ওষুধেই থাকে, তারপরও রোগমুক্ত
থাকতে ওষুধ তো গ্রহণ করতেই হবে। সবাইকে পরিমিত
পরিমাণে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য
প্যারাসিটামলের ডোজ ৫০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট
একটি, কখনও প্রয়োজনে ২টি, তবে ২৪ ঘণ্টায় ৪০০০
মিলিগ্রামের বেশি খাওয়া যাবে না। শিশুদের
ক্ষেত্রে বয়স এবং ওজন অনুযায়ী প্যারাসিটামল সিরাপ
দিতে হবে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন পরামর্শ
দিয়েছে যদি শিশুর জ্বর ১০১.৩ ফারেনহাইটের
বেশি থাকে, তবেই প্যারাসিটামল সেবন
করা যেতে পারে । -ডা. সুপ্রিয়া রায়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন