মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৪

সুইসাইড

জাপানে "সি অফ ট্রি" নামে একটি বন আছে... যেখানে কিছুদূর
হাঁটলেই দেখতে পাবেন গাছ গুলোর ডালে মানুষের কঙ্কাল
ঝুলছে ...
প্রতি বছর এখানে প্রচুর মানুষ সুইসাইড করতে আসে... কেউ কেউ
অনেক দূর দেশ থেকে টাকা খরচ করে মরতে আসে। মানুষ
নিরিবিলিতে মারা যেতে পছন্দ করে।
মৃত্যুর জন্য এই জায়গাটি বেছে নেয় কেন জানেন? যেন কেউ
কখনো খুঁজে না পায়... মানুষ বড় অভিমানী প্রাণী...
মনোবিজ্ঞানীরা এখন আমাদের বলছে প্রতিটি সুইসাইডের
রক্তে তিনটি জিনিস মিশে থাকে... ১- অভিমান ২ – হতাশা ৩–
আত্মবিশ্বাসের অভাব...
......পুলিশ সদর দপ্তরের হিসেব
অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর সুইসাইড করছে প্রায় দশ
হাজার ! অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ২৭ জন !! এই টুকু
একটা দেশে প্রতি ঘণ্টায় ১ জনের বেশি সুইসাইড করছে !!! এত
অভিমানী কেন আমরা ?
একজন মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিস করলেন। ফেরার সময়
মেয়ের জন্য জ্যামিতি বক্স কিনে আনলেন। রাতে খাবার
খেয়ে নাটক দেখলেন। ঘুমানোর আগে স্ত্রীর সাথে ছোট খাট
ঝগড়া হল। ঘণ্টা খানেক পর বিষ খেয়ে ফ্লোরে পরে আছে ...
......এই ব্যাপার গুলো কেন ঘটে ? মানুষ সাধারণত একটি বিশেষ
ঘটনায় সুইসাইড করে না। এই রোগটি সে তার ভেতরে অনেক দিন
থেকে লালন করে।
.....মানুষের অনুভূতি অনেক বেশি...মানুষ আত্মহত্যা করে...
পাখিরা কেন করে ? প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে ভারতের
একটি বিশেষ জায়গায় এক সাথে অনেক পাখি দলবদ্ধ
ভাবে সুইসাইড করে। এর ব্যাখ্যা কী আমি জানি না।
.....একজন আমাকে বলেছে , সেখানে এক সময় পাখিদের খাবার
ফুরিয়ে আসে... বাচ্চা পাখি গুলোকে বাঁচার সুযোগ
করে দিতেই বৃদ্ধ পাখিরা দলবদ্ধ ভাবে আত্মহত্যা করে।
এ নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে আমি একটা গল্প লিখেছিলাম।
গল্পটি সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত
একটি পাখি কে নিয়ে। মারাত্মক সব ডিলিউশন কী শুধু মানুষের
ক্ষেত্রেই হয় ?
স্কটল্যান্ডের ‘ ওভার টাউন’ ব্রীজের রহস্য কী ? প্রতি বছর শত
শত কুকুর এখানে এসে আত্মহত্যা করছে। তারা ব্রীজ
থেকে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ছে... এই নিয়ে যথেষ্ট
গবেষণা হয়েছে... নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারছে না...
কুকুর কিংবা পাখিদের অভিমান- হতাশা বলে কিছু থাকতেই
পারে... এই নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নাই।
আমার চিন্তা মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে... এরা চাইলে এই
পৃথিবী ছিদ্র করে ছিদ্রের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে অন্য
পৃথিবীতে চলে যেতে পারে... এরা কষ্টকে কেমিস্ট্রির
বোতলে ঢুকিয়ে ল্যাবে গিয়ে গবেষণা করতে পারে...
.....
এরা বিশাল সাইজের হাতি দিয়ে সার্কাস খেলে... অজগর সাপ
হাতে নিয়া ঘুরে বেড়ায়..... মানুষের মত দেখতে রোবট মানুষ
বানায় !
যে রোবটের ভেতর ইমোশন থাকবে... ! কী আশ্চর্য !
প্রতিটা মানুষই একজন বিজ্ঞানী...আপনি চাইলেই দেখবেন
ক্ষুদ্র কিছু হলেও সৃষ্টি করতে পারবেন...
.....প্রতিটি মানুষ একজন লেখক...একজন গায়ক... একজন কবি...
একজন নেতা...( দেখবেন কেউ কেউ আছে যারা আপনার
প্রতিটি কথা অক্ষরে অক্ষরে মানছে ) ... একজন শিক্ষক একজন
সেবক ... আর... একজন অপ্রতিষ্ঠিত মেধাবী...
এই পৃথিবীতে আপনার উপস্থিতি আপনার মস্তিস্কের ব্যাবহার
অনেক বেশি প্রয়োজন...সেটা ব্যাবহার করুন...
.....অভিমান করে চলে যাবার জন্য আপনার জন্ম হয় নি...
সব থেকে বড় ব্যাপার কী জানেন ? একজন ধর্ষক , একজন মাতাল ,
ঘুষখোর , বেশ্যা এরা প্রত্যেকেই প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ
পাবে... ; আত্মহত্যা আপনাকে প্রায়শ্চিত্ত করার কোন সুযোগ
দিবে না...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন